পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার দুই হাত হারানো ফাল্গুনী সাহা এবার এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। ঢাকা বোর্ডের অধীনে উত্তরা ট্রাস্ট কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ফাল্গুনী। ফাল্গুনীর অসাধারণ এ সাফল্যে তার মা-বাবাসহ পরিবারের সবাই খুশি। এ উপলক্ষে বাড়িতে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।
ফাল্গুনীর বাবা জগদীশ চন্দ্র সাহা নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, “মেয়ের ফল পেয়ে যে কী খুশি হয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ঈশ্বরের ইচ্ছা, শিক্ষকদের চেষ্টা ও সবার আশীর্বাদ ওর ওপর ছিল। তাই এমন সুন্দর ফল লাভ করা সম্ভব হয়েছে।” ভবিষ্যতে মেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হবে, এমন স্বপ্ন দেখেন জগদীশ চন্দ্র।
মা ভারতী রানী সাহা বলেন, “আমার চার মেয়ের মধ্যে ফাল্গুনী তৃতীয়। ২০০২ সালে বাসার ছাদে খেলার সময় বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ওর দুই হাত পুড়ে যায়। তখন ও ক্লাস টুতে পড়ত। পরে দুটি হাতই কব্জিসহ কেটে ফেলা হয়। ভেবেছিলাম ফাল্গুনীর আর লেখাপড়া হবে না। কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছায় ওর লেখাপড়ার পথে এটা কোনো বাধা হতে পারেনি। বাহুর মধ্যে কলম রেখে ও লেখতে পারে। ফাল্গুনী ২০০৫ সালে পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি পেয়েছে। ২০১১ সালে গলাচিপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপি-৫ পেয়েছে।”
ফাল্গুনীর মা বলেন “ফাল্গুনীর কৃতিত্বের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় ও টিভিতে প্রচারিত হওয়ার পর সে বিনা বেতনে ঢাকার উত্তরা ট্রাস্ট কলেজে পড়ার সুযোগ পায়।” ফাল্গুনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়তে চান বলে তিনি জানান।
ফাল্গুনীর বাবা একজন মুদি দোকানদার। মা সংসারের অভাব ঘোচাতে বাসায় বসে মিষ্টির প্যাকেট তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন। এই আয় দিয়েই চলে পরিবারের খরচ। চার বোনের মধ্যে বড় দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট বোন পূজা গলাচিপা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। ফাল্গুনী সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেছেন।
নতুন বার্তা ডটকম থেকে নেয়া।