বাংলাদেশ টেস্ট দলের নতুন অধিনায়ক করা হয়েছে সাকিব আল হাসানকে। আগামী জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই সাকিবের টেস্ট অধিনায়কত্বের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হবে। তার ডেপুটি হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এর আগে টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক ছিলেন তামিম ইকবাল। রোববার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সভা শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ ঘোষণা দেন। তবে অন্য দুই ফরম্যাটের নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসছে না। ওয়ানডেতে মাশরাফি মুর্তজা ও টি ২০-তে সাকিবই অধিনায়ক থাকছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় হতাশার সফর শেষে টেস্টে দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন অনুমিতই ছিল। নানা কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্ব। মুশফিকুর বলেছিলেন, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে তার কোনো স্বাধীনতা নেই। মিডিয়ার সামনে মুশফিকুর রহিমের এমন মন্তব্য মোটেও পছন্দ হয়নি বিসিবির। তখনই তাকে অধিনায়কের পদ থেকে সরানোর চিন্তা শুরু করে বোর্ড। শনিবার বাংলাদেশের বিদায়ী কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে আলোচনার পর কাল বোর্ড সভায় দেশের সবচেয়ে সফল টেস্ট অধিনায়ককে সরানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় বিসিবি। মুশফিক এখন থাইল্যান্ডে রয়েছেন। বিপিএলে তার দল রাজশাহী কিংস লীগ পর্বেই বিদায় নেয়ায় তার ব্যস্ততা নেই। বিসিবি মুশফিক, সাকিব, তামিম ও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে কথা বলেই টেস্ট দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান বলেন, ‘আগামী সিরিজ থেকে টেস্ট অধিনায়ক হবে সাকিব। সহ-অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।’ হঠাৎ করে টেস্ট অধিনায়ক পরিবর্তনের কারণ কী?
বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘পরিবর্তনের জন্য নির্দিষ্ট কোনো কারণ আছে এমনটা নয়। থাকলেও সবসময় তা বলা যাবে না। আমরা মনে করেছি, এখানে একটা পরিবর্তন দরকার।’ তিনি বলেন, ‘আমরা মুশফিকের কাছ থেকে সেরা ব্যাটিংটা চাই। সে ব্যাটিংয়ে আরও বেশি মনোযোগী হোক। তাকে চাপমুক্ত করতে চাচ্ছি। সব মিলিয়ে আমরা একটা পরিকল্পনা করেছি আগামী ৪-৫ বছরের জন্য। এটা তারই একটা পদক্ষেপ।’ অথচ সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজের আগে টেস্ট থেকেই ছয় মাসের বিশ্রাম চেয়েছিলেন। বিসিবি তাকে শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের জন্য বিশ্রাম দেয়। ছয় মাসের ছুটি দিলে সামনে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজেও তিনি খেলতে পারতেন না। তবে এ নিয়ে বিসিবি সাকিবের সঙ্গে আলোচনা করেছে। বিসিবি তিন ফরম্যাটেই একজন অধিনায়ক করতে পারে। তবে মাশরাফি ওয়ানডে দলের অধিনায়ক থাকায় এখনই এ সিদ্ধান্তে যেতে পারছে না বোর্ড।
এর আগে সাকিব নয়টি টেস্ট নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে প্রথম অধিনায়কত্ব করেন তিনি। ওই টেস্টেই জয় পায় বাংলাদেশ। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরের ব্যর্থতায় নেতৃত্ব হারান সাকিব। তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশ একটি টেস্ট জিতেছে। বাকি আটটিতেই হেরেছে টাইগাররা। মুশফিকের নেতৃত্ব বাংলাদেশ খেলেছে ৩৪টি টেস্ট। এর মধ্যে সাতটি জয়, নয়টি ড্র ও ১৮টি হেরেছে বাংলাদেশ।
সৈজন্যে – দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক