বর্তমান পৃথিবীতে কিছু রাষ্ট্রে জাতিগত বৈষম্য, দাঙ্গা-হাঙ্গামা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের সমন্বিত রূপ যখন জাতিগত বিরোধে পরিণত হয় তখন দেশটিতে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। আর ধর্মীয় দিক থেকে তারা যদি সংখ্যায় কম হয় তা হলে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। আবার কখনো তারা প্রাণভয়ে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী কোনো রাষ্ট্রে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। মিয়ানমারের ঘটনাই তার বড় প্রমাণ। সম্প্রতি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী সে দেশের রাখাইন রাজ্য থেকে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করলে তারা প্রাণভয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা চালায়। রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোয় দেশটির সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালিয়ে নারী-শিশুসহ মুসলিম রোহিঙ্গাদের হত্যা করে। দেশটির সেনাবাহিনীর দাবি হামলার মূল কারণ আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)। এ সংগঠনকে মিয়ানমার সরকার ইতোমধ্যে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। সেনাবাহিনী পরিচালিত এ গণহত্যার নাম দেওয়া হয়েছে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন। সরকারের দাবি হামলাকারীরা হাতবোমা, চাপাতি ও অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ১০ পুলিশ অফিসার, একজন সৈন ও একজন অভিবাসী কর্মকর্তাকে হত্যা করে। দেশটির সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যজুড়ে রোহিঙ্গাদের ওপর ক্লিয়ারেন্স অপারেশন নামে অভিযান চালায়, যা গণহত্যারই শামিল। রোহিঙ্গাদের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন, হত্যা বেড়েই চলেছে। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত প্রায় বহু মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং এর সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা রাখাইন রাজ্যে স্বাধীন গণমাধ্যমের কোনো প্রবেশাধিকার নেই। ওই এলাকায় জাতিগত বৈষম্য রয়েছে। মুসলিমদের ওপর যে ধরনের অত্যাচার-নির্যাচন চালানো হয় তা বিশ্ব মিডিয়ায় আসতে না দেওয়ার কারণেই রাখাইন রাজ্যে স্বাধীন গণমাধ্যমের কোনো উপস্থিতি নেই। দেশটির সেনাবাহিনী তা নিয়ন্ত্রণ করে। যার কারণে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। প্রকৃত বাস্তবতা হচ্ছে, আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে যে মুসলিম বিদ্বেষ শুরু হয়েছে তার ধারাবাহিকতা রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন, হত্যা। কাঠের মুগুর ও রামদা দিয়ে রোহিঙ্গারা সেনাসদস্যদের ওপর হামলা চালিয়েছে এটা অবাস্তব ও হাস্যকরও বটে।
জাতিসংঘের এক তথ্যে জানা যায়, বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর নাম রোহিঙ্গা। বর্তমান মিয়ানমারের রোহিং (আরাকানের পূর্ব নাম) এলাকায় বসবাসকারীরা রোহিঙ্গা নামে পরিচিত। সে মুসলিম রোহিঙ্গারা আজ মিয়ানমারের সেনাদের দ্বারা নির্যাতিত। প্রাণভয়ে তারা দেশ থেকে পালাচ্ছে। নিরীহ রোহিঙ্গাদের ওপর গুলি ছুড়ে তাদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। গত ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন প্রদেশে শুরু হওয়া বিদ্রোহ দমন করতে এ হামলা চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হত্যার পাশাপাশি নারীদের ধর্ষণ ও বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। মিয়ানমার সরকারের এ নির্যাতনের মুখে এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা কয়েক দশকে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবে চলে গেছে বলে উইকিপিডিয়ার এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়। মিয়ানমারের বৌদ্ধ রাখাইনদের টার্গেট হলো মুসলিম রোহিঙ্গা। সেখানে জাতিগত বিদ্বেষ এমন প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, তাদের নামাজ আদায়ে বাধা, নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, বিষয়-সম্পত্তি জোর করে কেড়ে নেওয়া, এমনকি মুসলিম রোহিঙ্গাদের সংখ্যা যেন বৃদ্ধি না পায় সে জন্য তাদের বিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মিয়ানমার সরকার। সরকারের সব বাহিনী একত্রিত হয়ে তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে, যাতে করে দেশত্যাগে বাধ্য হয়। মিয়ানমারের নির্যাতনের মুখে শত শত মুসলিম রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে চাইছে। নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছেন মিয়ানমারের মুসলিম নাগরিকরা। কিন্তু কোস্টগার্ডের তাড়া খেয়ে তারা আবার মিয়ানমারের দিকে, মিয়ানমারের সেনাদের তাড়া খেয়ে আবার বাংলাদেশে ঢোকার ব্যর্থ চেষ্টায় নাফ নদীতে নৌকায় ভেসে বেড়াচ্ছে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ। এ পর্যন্ত নাফ নদী থেকে অনেকের লাশ পাওয়া গেছে। তাদের এ চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় মানবতা যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হিসাব মতে, ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বিশিষ্টজনরা এ মাসেই অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীকে রোহিঙ্গা ইস্যু সংকট নিয়ে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নতুন নয়। সম্প্রতি দেশটিতে আবারও জাতিগত বিদ্বেষ-সহিংসতা শুরু হয়েছে। মিয়ানমারে জাতিগত বিদ্বেষ, নিপীড়নের শিকার দেশটির মুসলিমরা। সারা বিশ্ব যেখানে এগিয়ে যাচ্ছে, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ঘটছে, মানুষের জীবনমান উন্নত হচ্ছে, মানবিকতার বিকাশ ঘটছে, সেখানে মিয়ানমারের মুসলিমরা নির্যাতিত হবে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হবে, ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হবেÑ এ বিষয়গুলো নিঃসন্দেহে উদ্বেগের ও মানবতার চূড়ান্ত পরাজয়। মানুষের বিবেক, মনুষ্যত্ব আজ ভূলুণ্ঠিত। সারা বিশ্বে অনেক জটিল সমস্যার সমাধান বিশ্বনেতারা সেরে ফেলছেন, সেখানে মিয়ানমারের জাতিগত বৈষম্য-বিরোধ দীর্ঘদিনের তা আজও অব্যাহত। কয়েক যুগ ধরে এ জাতিগত বিরোধ ও নির্যাতনের কারণে বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। নিকট-ইতিহাস থেকে জানা যায়, ২০১২ সালে রাখাইন বৌদ্ধ ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হলে মুসলিম রোহিঙ্গারা পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের সে সময়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তার পরও কৌশলে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। এ বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার সার্বিক দিক থেকে ভার বহন বাংলাদেশের পক্ষে কঠিন। যার কারণে মিয়ানমার সরকার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করেনি। এর আগে আশির দশকে সামরিক জান্তা রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করে এবং এই সুযোগটি কাজে লাগায় উগ্রপন্থি বৌদ্ধরা। তারা সরকারের মদদে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করলে আশির দশক থেকে প্রচুরসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বিগত কয়েকদিনে লক্ষাধিক রোহিঙ্গার বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ ঘটে। মিয়ানমারের কোনো সরকারই রোহিঙ্গাদের সুনজরে দেখেনি। অনেকে অবশ্য আশা করেছিল অং সান সু চি কিছু একটা করবেন। কিন্তু বর্তমান সরকারও এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং অং সান সু চি রোহিঙ্গাদের বিদেশি হিসেবে বিবেচনা করেছেন এবং পুলিশের ওপর হামলার জবাবে সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায় বলে দাবি করেছেন। ফলে দেশটিতে বৌদ্ধ ও মুসলিম রোহিঙ্গাদের মধ্যে জাতিগত বিদ্বেষ সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। এর একটা সুষ্ঠু সমাধান করতে না পারলে দেশটিতে নৃশংস বর্বরতা আরও বেড়ে যাবে। আরও নিহত ও ধর্ষণের শিকার হবে রোহিঙ্গারা। মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা যে চরম বিপদের মুখে রয়েছে এবং অনেকটা মিয়ানমার সরকার তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাদের এ মানবিক বিপর্যয়কে উপলব্ধি করে সারা বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর এক কাতারে আসা উচিত। কারণ শুধু মিয়ানমারে মুসলিম হত্যা নয়, পৃথিবীতে অনেক দেশের মুসলমানরা নানা ধরনের নির্যাতন-অসুবিধার মধ্যে আছে। মুসলিম বিদ্বেষ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। এভাবে মুসলিমরা মার খাবে, নানা নির্যাতনের শিকার হবে এটা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এ জন্য বিশ্বের শক্তিধর মুসলিম রাষ্ট্রকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমাধানের উদ্যোগী হওয়া উচিত। বাংলাদেশেরও উচিত হবে অনুপ্রবেশে বাধা প্রদানের পাশাপাশি এ ব্যাপারে বিশ্ব নেতাদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এ রাজ্যটিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী পরিচালিত অভিযানে বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ইস্যু করে মিয়ানমারে যা ঘটছে তা অত্যন্ত অমানবিক ঘটনা। সভ্যতার অন্তরালে ঘটছে অসভ্য বর্বরতা। মানবতার চরম পরাজয়। যেহেতু এখন বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে, তাদের বোঝা এখন বাংলাদেশের কাঁধে। উপরন্তু আরও রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে, যদিও সীমান্তে কড়া নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তাই আমরা মনে করি, বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রের সমন্বয়ে একটি উদ্যোগ নিতে পারে বাংলাদেশ। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের ভূমিকাও যথেষ্ট রয়েছে। জাতিসংঘের উচিত হবে রোহিঙ্গাদের এ মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। গত বছরের অক্টোবরে নিষ্ঠুর বর্বরতায় প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৮৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে বাংলাদেশে। প্রাণ বাঁচাতে ইতোমধ্যে শতাধিক হিন্দু পরিবার বাংলাদেশে প্রবেশ করে। গত কয়েকদিনে প্রায় ১৬৫ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এসব বহিরাগত শরণার্থীর কারণে আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এমনিতেই ভয়াবহ বন্যার ধকল কাটিয়ে ওঠা বাংলাদেশের জন্য কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপরন্তুÍ রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা। বারবার রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর কথা বলা হলেও মিয়ানমার সরকার তা আমলে নিচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের বাঙালি মুসলমান জঙ্গিগোষ্ঠী সন্ত্রাসবাদী বা বিচ্ছিন্নতাবাদী যাই বলা হোক না কেন, প্রকৃতপক্ষে তারা বহিরাগত নয়। ১৭৮৫ সালে আরাকান (রাখাইন রাজ্যের পূর্ণ নাম) দখলকারীই বহিরাগত। ১৯৬২ সালে দেশটিতে সামরিক সরকার প্রতিষ্ঠার পর থেকে তাদের ওপর অত্যাচার শুরু ও বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তারা বিভিন্নভাবে দীর্ঘদিন থেকে মানসিক নির্যাতনের শিকার। বিবাহ নিষিদ্ধ, জমিজমা কেড়ে নেওয়া, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। আর কত নির্যাতন তারা সহ্য করবে। রোহিঙ্গাদের মৌলিক ও মানবিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। ক্লিয়ারেন্স অপারেশন অভিযানের নামে একটি জনগোষ্ঠীকে হত্যা, ধর্ষণ, দেশত্যাগে বাধ্য করার নিষ্ঠুর নীতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। জাতিগত বিদ্বেষ-সহিংসতা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। এ পথে শুধু দুর্বল প্রতিপক্ষের রক্তই ঝরবে, তাদের কান্না থামানো যাবে না। মানবিকতা হবে ভূলুণ্ঠিত। সারা পৃথিবী আজ অশান্ত হয়ে উঠছে। কোনো রাষ্ট্রে শান্তি নেই। পৃথিবীর বড় বড় রাষ্ট্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় একটা ভূমিকা নিতে পারে অথচ তারা আজ নিজেদের স্বার্থে কখনো চুপ আবার কখনো অন্তর্দ্বন্দ্ব-কলহে লিপ্ত। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। নির্যাতিত হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের পাশে কেউ নেই। বাংলাদেশ থেকেও তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কেউ তাদের আশ্রয় দিতে চাচ্ছে না। বিশ্ববিবেক মনুষ্যত্ব আজ লোপ পেয়েছে, বিশ্বমানবতা আজ পদদলিত। কে শোনাবে তাদের আশার বাণী, কে জাগাবে আজ বিশ্ববিবেককে। মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর নারকীয় হামলায় সু চির নিশ্চুপয়তার কারণে গত অক্টোবরে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারের দাবিতে লাখ লাখ মানুষ সু চির নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদনে স্বাক্ষর করছেন। তবে নোবেল পুরস্কার প্রত্যাহারের নিয়ম থাক বা না থাক সেটা বড় কথা নয়। অং সান সু চি যে শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন এটাই কি সেই শান্তির নমুনা, একটি জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করা? শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার প্রধানতম অর্থ হচ্ছে, শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা ও অবদান রাখা। কিন্তু তার সরকার যে অশান্তি সৃষ্টি করেছে তাতে কি নোবেল পুরস্কারের মর্যাদা ক্ষুণœ হচ্ছে না। আমরা মনে করি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমার সরকারকে দ্রুত ফিরিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের অন্যান্য শক্তিধর রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের কান্না, নির্যাতন, মানবিক বিপর্যয় বন্ধ করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে। য় মোহাম্মদ নজাবত আলী : শিক্ষক ও কলাম লেখক