ঈদ উল ফিতর মুসলমান স¤প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। পবিত্র রমজান মাসজুড়ে সিয়াম সাধনার পর ঈদের দিন মুসলিমগন মেতে ওঠে নির্মল আনন্দে। আর ঈদের এই আনন্দকে স্বর্গীয় করে তোলে শিশু-কিশোররা এবং তাদের প্রানচাঞ্চল্য। তবে সবার জন্য ঈদ একরকম হয় না। ঈদের দিন যেমন অনেকে অন্ন্যান্ন দিনের মত বাবা-মা ও পরিবারের সান্নিধ্যে কাটায়,তেমনি অনেকদিন পর আপনজনদের কাছে পায়, তাও আবার অল্প কয়দিনের জন্য। আবার এমন অনেক শিশু-কিশোর আছে যারা ঈদ কাটায় মা কিংবা বাবা অথবা দুজনকে ছাড়াই, কারন তারা যে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
এক
তানহা। ওর পুরো নাম আনিকা বুশরা তানহা। পড়ে ভিকারুনন্নিসা নূন স্কুলের ইংরেজী মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেনীতে। সে ঈদ উদযাপন করে বাবা-মা , ছোট ভাই বোন এবং অন্যন্য স্বজনদেও সাথে।ঈদ কাটে তার খুবই মজা করে। ঢাকার যান্ত্রীক জীবনে ঈদকে সে দেখে সারা বছর রুটিন কাজের মধ্যে বিরতি হিসেবে। ঢাকাতেই থাকে ওরা। ঈদ থেকে থেকে সে খোজে বছর জুরে কাজ করার অনুপ্রেরনা। সবার সাথে ঈদ করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে কওে তানহা। আর যারা এটা থেকে বঞ্চিত তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ কওে সে বলে, যারা ঈদে বাবা মাকে পাশে পায়না,তাদেন জন্য খুবই খারাপ লাগে। আমদের আব্বু আম্মুরা তাদেরকে নিজের সন্তানের মত দেখলে আমার ভালো লাগবে।
দুই
চার বোনের মধ্যে সবার ছোট সিনথিয়া। রাজধানীর একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য প্রকৌশলের ছাত্রী সে। পড়াশুনার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই স্বজনদের কাছ থেকে দুরে অবস্থান তার। এখনও থাকে একটি ছাত্রী হোস্টেলে। ঈদ কাটে বাবা – মা এবং আপুদের সাথে খুলনার নিজ বাড়িতে। তবে আপুদের সবার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় বিশেষ দিন গুলোতেও একত্র হওয়া হয়ে ওঠে না। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই সিনথিয়ার। ঈদেও ছুটি শেষ হয়ে গেলেও আসতে ইচ্ছে করেনা পরিবার ছেড়ে। স্বান্তনা মাঝে মাঝে দেখা হয় আব্বু-আম্মুর সাথে। তবে একা একা থেকে যে অবাধ স্বাধীনতা পায় সিনথি, তাও আবার তার ভালো লাগেনা। কার কথা হলো – আমি মনে করি, আমাকে সঠিক দিক নিদের্শনা দেয়ার জন্য কারো থাকা দরকার ছিলো।কারন একা একা কোন কিছুতেই ভালো করা সম্ভব নয়।
তিন
আদিব পড়াশুনা করছে আইডিয়াল স্কুলের বনশ্রী শাখায়। দু বোন, এক ভায়ের মধ্যে ছোট সে।মা স্কুল শিক্ষক। আর বাবা সবাইকে ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। তাই পিতৃ স্নেহ থেকে বঞ্চিত আদিব। দেও দিনটি বন্ধুদের সাথে মজা কওে কাটায় সে। বাবাকে সে মিস করেনা এ দিনটিতেও, এমনটিই আদিবের বক্তব্য। কে জানে হয়তোবা বাবার প্রতি অভিমান থেকেই তার এ কথা। না হলে সে এ কথা কি কওে বলে- সবাই যখন বাবার বকা খেয়ে মন খারাপ করে, তখন মনে হয় আমার বাবা যদি আমাকে বকতো , সেটাও ভালো ছিলো !।
তবে যে যেভাবেই উপভোগ করুকরা কেন, ঈদ সবার জন্যই বয়ে আনে অফুরান আনন্দের। কারন, ঈদ মানেইতো আনন্দ।