সিলেটের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ এখন বাঁচার জন্য লড়ছে। অনেকে অভুক্ত, কেউ আধা পেট খেয়ে আছে। বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট তীব্র। ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকে স্থানীয় প্রশাসনের চালু করা আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েও পাচ্ছে না খাবার। বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে গবাদিপশু–পাখি। মানুষও নিখোঁজ হচ্ছে। খাদ্য, সুপেয় পানি আর চিকিৎসার সামগ্রী দ্রুত পৌঁছানো না গেলে সেখানকার মানুষ আরও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে, এমন আশঙ্কা সবারই।
স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্যাকবলিত এলাকায় নৌকার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এতে অসহায় মানুষের কাছে খুব একটা যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি সরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হওয়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো যাচ্ছে না। এ ছাড়া খাদ্যগুদামের আশপাশে পানি থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সেখান থেকেও খাদ্যসামগ্রী বের করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী আছে, কেবল পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে দ্রুতই সবখানে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, অনেকের ঘরে কোমর থেকে গলাসমান পানি। ফলে জীবন বাঁচাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে তারা। তবে এখানে এসেও পড়েছে আরেক ভোগান্তিতে। স্থানের তুলনায় এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের সংখ্যা বেশি। গবাদিপশু–পাখির সঙ্গে গাদাগাদি করে একই কক্ষে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা গতকাল শুক্রবার রাত কাটিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার উপযোগী পর্যাপ্ত সুবিধা নেই। এমনকি খাবারও পাচ্ছে না অনেকে, ফলে খাবার না পেয়ে অভুক্ত অবস্থাতেই আছে তারা।
গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একাধিক বানভাসি মানুষ জানিয়েছে, কোথাও কোথাও ঘরের চাল পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ দুটি উপজেলার শতভাগ বাড়িঘর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অনেকে অনিরাপদ জেনেও বাড়ি ও গবাদিপশুর মায়ায় পানিবন্দী হয়েই দিন কাটাচ্ছে।