অবশেষে বন্ধ হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিধিনিষেধ অবাধ বিচারণে

নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধের কারণ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি বলেছেন, এখন শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ ঘটছে। এটি আগে ছিল না। এটা আমলে নিতে হয়েছে। মাঠের চিত্রের ওপর ভিত্তি করেই বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত শনিবার ২১ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. সাবিরুল ইসলামের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২১ জানুয়ারি থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব স্কুল, কলেজ ও সমপর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ১০০-র বেশি জনসমাবেশ করা যাবে না।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ নিয়ে বলেন, সংক্রমণ হঠাৎ করে বেশি বেড়ে গেছে। এ জন্য শঙ্কা আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারণে যেন সেই শঙ্কা বেড়ে না যায়। এ জন্যই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত খুশিমনে, তা ভাবার কারণ নেই। পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক নজরে রেখে যখনই মনে হবে ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়া সম্ভব, তখনই ফিরে যাওয়া হবে। আপাতত ২ সপ্তাহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুখোমুখি ক্লাস বন্ধ থাকবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যেখানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া সম্ভব, সেখানে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা থাকবে। এ ছাড়া অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমও থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সেখানেও মুখোমুখি ক্লাস বন্ধ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক শিক্ষার্থীদের এখন যেভাবে ম্যানেজ করা হচ্ছে, অসুস্থ হলে আইসোলেশন বা বাড়িতে পাঠানো ইত্যাদি করা হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষকদের অফিসে যেতে হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

এছাড়া গত শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে করোনার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত অর্ধেক জনবল দিয়ে চলবে। আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খুব শিগগির তা কার্যকর করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য মেলা, বইমেলা, স্টেডিয়ামে টিকা ও করোনা টেস্টের সনদ নিয়ে যেতে হবে। সামাজিক অনুষ্ঠানে ১০০ জনের বেশি যেতে পারবে না এবং তাদেরও টিকার সনদ থাকতে হবে। যারা যোগদান করবে তাদের অবশ্যই টিকা সনদ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর সার্টিফিকেট আনতে হবে। সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্প কারখানাসমূহে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা সনদ গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দায়িত্ব বহন করবেন। বাজার, শপিংমল, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সবধরনের সমাবেশে অবশই মাস্ক ব্যবহারসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মনিটর করবে।

উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে দীর্ঘ ১৮ মাস পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে দেওয়া হয়েছিল যা আবার করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়ায় আগের বন্ধ পরিস্থিতিতে ফিরে যেতে হয়েছে।

আরো কিছু পোস্টঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *