পজিটিভ চিন্তা শক্তি দিয়েই জীবন বদলে দিন

ইতিবাচক চিন্তা হচ্ছে এমন এক মানসিক মনোভাব ধারন করা যার জন্য আমরা প্রতিটি কাজের ভাল এবং সন্তোষজনক ফলাফল আশা করি । অন্যভাবে বলতে গেলে ইতিবাচক চিন্তা হচ্ছে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও আশাহত না হয়েও ঠান্ডা মাথায় পরিবেশকে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসার চেষ্টা করে যাওয়া। জীবনকে সুস্থ, সুন্দর করার জন্য ইতিবাচক চিন্তার কোন বিকল্প নেই।

১। সময় নিনঃ
নিজের সাথে খারাপ কিছু ঘটতে থাকলে মোটেও ঘাবড়াবেন না অপেক্ষা করুন, নিজেকে সময় দিন। এই প্রক্রিয়া আপনার মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা তৈরি ও আত্মনিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

২। ইতিবাচক মানুষের সাথে চলাফেরা করুনঃ
এমন মানুষের সাথে মেলামেশা করুন যারা আপনাকে গঠনমূলক কাজ ও আশাবাদী হতে সাহায্য করবে। নেতিবাচক চিন্তার মানুষদের সঙ্গ পরিহার করুন।

৩। অন্যদের সাহায্য করুনঃ
অন্যকে আপনার সাধ্যমত সাহায্য করুন কারণ অন্যকে সাহায্য করা আপনাকে আত্মতৃপ্তি দেবে। যা আপনার ইতিবাচক মনোভাব দৃঢ় করতে সাহায্য করবে।
৪। কৃতজ্ঞ থাকুনঃ
আপনার যা আছে সেগুলো নিয়ে ভাবুন কারণ অনেকের কাছেই সেগুলো নেই। আবার অন্যের কাছে থাকলেও ক্ষতি নেই কারণ আপনার কাছে সেগুলো আছে। কৃতজ্ঞতা বোধ করুন এটি আপনার মনকে শক্তিশালী করবে। Joseph Campbell বলেন – এমন এক স্থান খুঁজে বের করুন যা আপনাকে সুখের অনুভূতি দিবে এবং সুখের অনুভূতি কষ্টগুলোকে দূরে সরিয়ে রাখবে ।

৫। ইতিবাচক উক্তি পড়ুনঃ
প্রতিদিন কিছু ইতিবাচক উক্তি বা লেখা পড়ুন । ইতিবাচক উক্তি বা লেখায় আশা বাড়ে, মনের ভয় দূর হয়, বিষণ্ণতা দূর করে। উদাহরণস্বরূপ নিচে কিছু ইতিবাচক উক্তি দেয়া হলঃ

“ব্যর্থরা অবচেতনভাবে ব্যর্থতার সঙ্গে নিজেদের সংযুক্ত করে। সচেতনভাবে সাফল্যের সঙ্গে একাত্ম হলে সাফল্যই আপনার দিকে আকৃষ্ট হবে।”

“সুন্দর প্রত্যাশা ও প্রত্যয় নিয়ে দিন শুরু করুন। ঘুম ভাঙতেই বলুন – প্রভু ধন্যবাদ, একটি নতুন দিনের জন্যে। দিনের সমাপ্তিও ঘটবে এইভাবে।”

“কাউকে অভিনন্দন জানানোর সুযোগ পেলে আন্তরিকভাবে জানান।”

“নিজের কাছে নিজ সততা বজায় রাখুন। প্রতিটি কাজে আপনার পক্ষে যা করা সম্ভব, আন্তরিকতার সঙ্গে করুন।”

“দায়িত্ব নিতে ভয় পাবেন না। তাহলেই নতুন কিছু শিখতে পারবেন।”

“কাজে উদ্যোগী না হলে প্রতিটি কাজই অসম্ভব মনে হয়।”

“‘আমি এ বিষয়ে জানি না’ এ কথাটি বলতে কখনও ভয় পাবেন না।”

“‘আমি দুঃখিত’ কথাটি সব সময় আন্তরিকতার সাথে উচ্চারন করুন।”

“দীর্ঘসূত্রিতা ও আলস্যকে প্রশ্রয় দেবেন না। যখন যা করা প্রয়োজন, তখনই তা করুন।”

“নেতিবাচক চিন্তার চাইতে ইতিবাচক চিন্তা তোমাকে সবকিছু আরও ভালোভাবে করার সুযোগ করে দেবে।” – জিগ জিগলার

“নেতিবাচক শূন্যতার চাইতে ইতিবাচক যেকোনো কিছুই ভালো।” – এলবার্ট হাবার্ড

“ইতিবাচক কোনো কাজ করার জন্য আমাদেরকে প্রথমে ইতিবাচক মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।” – দালাইলামা

“সাফল্যের জন্য সবচেয়ে বড় প্রস্তুতি হলো নিজের সম্পর্কে নিজের মনে একটি ইতিবাচক ও শক্ত অবস্থান গড়ে তোলা।” – জয়েস ব্রাদার্স

“হতাশাকে সময়ে সময়ে খুব বিরক্তিকর বলে মনে হলেও সাফল্যের জন্য এটি খুবই ইতিবাচক ও প্রয়োজনীয় একটি বিষয়।” – বো বেনেট

“যে মনের দিক থেকে বৃদ্ধ নয়, বার্ধক্য তার জীবনে আসে না।” – ফিলিপ ম্যাসিঞ্জার

৬। নিজেকে ক্ষমা করতে শিখুনঃ
কোন ভুল হলেই আমরা অনেক সময় নিজেকে দোষারোপ করি, হীনমন্যতায় ভুগী যা আমাদের মনে নেতিবাচক ভাবনার জন্ম দেয়। বরং আমাদের উচিত ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া যাতে ভবিষ্যতে আর এমন ভুল না হয় আর অবশ্যই উচিত নিজেকে ক্ষমা করে দেয়া কারণ ভুল তারই হয় যে কাজ করে। কোন কাজ করতে গেলে ভুল হওয়াটাই স্বাভাবিক, আমরা কেউ নিখুঁত নই এ কথাটা মেনে নিলে নিজেকে ক্ষমা করাটাও সহজ হয় ।

৭। অনুসন্ধান করুন ভুলটা কোথায় হচ্ছেঃ
ইতিবাচক চিন্তার মানে এই নয় যে ভুল গুলো এড়িয়ে যেতে হবে, দ্বিতীয়বার যাতে একই ভুল না হয় সে জন্য কি কারনে ভুল হচ্ছে সেটা খুঁজে বের করা জরুরী। আর ভুল শুধরানোর জন্য অনুসন্ধান করা মোটেও সময় নষ্ট করা নয়।

৮। ব্যর্থতাকে সুযোগ হিসেবে নিনঃ
বলা হয়ে থাকে ব্যর্থতাই হচ্ছে সাফল্যের ভিত্তি স্তম্ভ, আসলেই কিন্তু তাই। আমাদের জীবনের নেতিবাচক ব্যর্থতাগুলো আমাদেরকে বড় বড় সাফল্য অর্জনের পথ তৈরিতে সাহায্য করে। যেমনঃ আপনি চাকরী হারালেন আর ভাবছে সব শেষ! কিন্তু আসলেই কি তাই তাই? ভেবে দেখুন আপনার জীবনে এখন আরেকবার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেল। এখন আপনি চাইলেই নতুন কিছু শুরু করতে পারেন যা আপনাকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যেতে পারে।

সুতরাং ব্যর্থতায় হাল ছেড়ে না দিয়ে বরং সাফল্য আসার জন্য অপেক্ষা করুন। মেঘের আড়ালে যেমন সূর্য্য হাসে তেমনি ব্যর্থতার অপর দিকে সাফল্য আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। নিজেকে ইতিবাচক করে গড়ে তুলুন তাহলে আপনি ইতিবাচক ফল পাবেন। আর শুধুমাত্র ইতিবাচক চিন্তা আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে তবে কেন মিছেমিছি হতাশায় ডুবে আছেন?

আরো কিছু পোস্টঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *