২০২৩ সাল থেকে আসছে শিক্ষা ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন। উঠে যাচ্ছে নবম ও দশম শ্রেণী সিলেবাসের ভিত্তিক বোর্ড পরীক্ষা। একেবারে দশম শ্রেণির পর এসএসসি নামে একটি পাবলিক পরীক্ষা হবে, তবে তা হবে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে।
ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০ বিষয়ের উপর পাঠ্য বাধ্যতামূলক থাকছে। ফলে নবম ও দশম শ্রেণী থেকে উঠে যাচ্ছে বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা শাখা নির্বাচন পদ্ধতি। শুধুমাত্র দশম শ্রেণি পাসের পরই একাদশ শ্রেণী থেকে থাকছে শাখা নির্বাচনের সুযোগ। আর দশম শ্রেণির আগে কোনো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। ফলস্বরূপ উঠে যেতে পারে জে.এস.সি ও পি.এস.সি পরীক্ষা। তবে দশম শ্রেণীর আগে পাবলিক পরীক্ষা হবে কি হবে না সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরে জানাবে।
প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত যে ১০টি বই পড়ানো হবে। বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, সামাজিক বিজ্ঞান, জীবন ও জীবিকা, ধর্ম, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। বর্তমানে এসব শ্রেণিতে ১২ থেকে ১৪টি বই পড়ানো হচ্ছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। নবম শ্রেণিতে তিনটি (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) শাখায় ভাগ হয়ে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে।
একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীতে ক্রমানুসারে দুটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ প্রতি বর্ষ শেষে নেয়া হবে পাবলিক পরীক্ষা। আর এই দুটি পরীক্ষার ফলের সমন্বয়ে এইচএসসির চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।
প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় পরিবর্তনের কাজটি আগামী বছর পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে। এর পরের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল থেকে তা সবার জন্য বাস্তবায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে ২০২৫ সালে গিয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে নতুন শিক্ষাক্রম পুরোপুরি বাস্তবায়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার জাতীয় শিক্ষাক্রমের খসড়া রূপরেখা অনুমোদন দিয়েছেন। এরপর শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রস্তাবিত শিক্ষাক্রমের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রাথমিকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বিদ্যালয়েই ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে। আর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে গিয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ। আর ৪০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে ক্লাস শেষে পরীক্ষার মাধ্যমে যেটি সামষ্টিক মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। ষষ্ঠ ও অষ্টম শ্রেণিতে বিদ্যালয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে ৬০ শতাংশ এবং ৪০ শতাংশ হবে সামষ্টিক মূল্যায়ন। নবম ও দশম শ্রেণিতে কয়েকটি বিষয়ে শিখনকালে অর্ধেক মূল্যায়ন হবে এবং বাকি অর্ধেক সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩০ ভাগ শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং ৭০ ভাগ সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে।