একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলেন টাইগার দলের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। আজ কিম্বার্লিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে অনবদ্য ১১০ রান করেন মুশি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুশফিকুর।
আজকের ওয়ানডের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১৭টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশে। এসব ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানই সেঞ্চুরির দেখা পাননি।
এতোদিন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ছিলো ৯০ রান। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৯০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি ওপেনার সৌম্য সরকার।
আজকের ম্যাচে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে পঞ্চম সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মুশফিকুর। ২০১৫ সালে নভেম্বরের পর ওয়ানডেতে তিন অংকে পা দিলেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। আর এই প্রথমবারের মত প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দেখা পান মুশি। এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮টি ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক।
সৌম্যকে টপকে শীর্ষে মুশফিক
কিম্বার্লি ডায়মন্ড স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা।
সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ১০৪ বলে ক্যারিয়ারের ৫ম তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুশিফিক। দলের হয়ে তার এই দুর্দান্ত শতকে ১০টি চার ও ২টি ছয়ের মার ছিল তার।
মুশফিকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাটিং করে ২৭৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় সফরকারী বাংলাদেশ। ১০ টি চার এবং ২ টি ছয়ের সাহায্যে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ১১০ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক। এর আগে মুশফিকের চারটি সেঞ্চুরির মধ্যে দুটি এসেছিলো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আর বাকি দুটির একটি ভারত ও অপরটি পাকিস্তানের বিপক্ষে।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই ইনিংসটি খেলার মাধ্যমে প্রোটিয়াদের মাঠে কোনো বাংলাদেশি হিসেবে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটিও দখলে নিয়েছেন টাইগার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিক। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসটি ছিল ওপেনার সৌম্য সরকারের। ২০১৫ সালে দেশের মাটিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ৯০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন সৌম্য।
১০ চার, ২ ছক্কায় মুশফিকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি
আগেই জানা ছিল, কিম্বার্লি ডায়মন্ড স্টেডিয়াম সবসময়ই ব্যাটসম্যানদের হয়ে কথা বলে। তাই সেই হিসেবে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে মোটেও ভুল করেননি টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। আর সেটি ব্যাট হাতে ভালোই বুঝিয়ে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
এদিকে ১০৪ বলে ক্যারিয়ারের ৫ম তম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন মুশিফিক। দলের হয়ে তার এই দুর্দান্ত শতকে ১০টি চার ও ২টি ছয়ের মার ছিল তার।
এর আগে টস জিতে বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন ইমরুল-লিটন। নেমেই শুরু থেকে লিটন-সৌম্য বেশ ভালোভাবে এগোতে থাকে। কিন্তু দলীয় ৪৩ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২১ রানে ক্যাচ তুলে লিটনের ফেরাতে বদলে যায় সেই ধারণা। এরপর ব্যক্তিগত ৬৭ রানের মাথায় ফিরেন অপর ওপেনার ইমরুল কায়েস।
দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর টেস্ট অলরাউন্ডার সাকিবকে নিয়ে শক্ত ভীত গড়ার লক্ষ্যে ব্যাট চালাতে থাকেন টেস্ট ক্যাপ্টেন মুশফিক। দুজন মিলে শক্ত পার্টনারশীপও গড়েন। এরই মাঝে দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে ২০০ উইকেট ও ৫ হাজার রানের রেকর্ড গড়েন সাকিব। রেকর্ড গড়ার একটু পরই অর্থাৎ ব্যক্তিগত ২৯ রানে ফিরে যান তিনি। ফলে ৬৯ রানের জুটি ভাঙে। এরপর ফিরে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের এই আসা যাওয়ার মাঝেও ঠিকই নিজের গন্তব্যে তরী নিয়ে যেতে সক্ষম হন টেস্ট ক্যাপ্টেন মুশফিক। তুলে নিন নিজের ক্যারিয়ারের ৫ম সেঞ্চুরি।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের জানুয়ারির পর এটাই কিম্বার্লিতে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। গত ১৪ বছরে এই মাঠে ওয়ানডে হয়েছে মাত্র তিনটি। কিম্বার্লিতে এর আগে খেলা দুই ওয়ানডেতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ২০০২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ও ২০০৩ বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছিল ৭ উইকেটে। ডায়মন্ড ওভালে খেলা ৭ ওয়ানডের ছয়টিতেই জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা, হেরেছে অন্যটিতে।