এ প্রজাতির মাছগুলো দক্ষিণ মেক্সিকো, হন্ডুরাস ও উত্তর দক্ষিণ আমেরিকায় পাওয়া যায়। চার চক্ষুবিশিষ্ট মাছ এ্যানাপ্লেস প্রজাতির প্রাণী। তাদের চক্ষুগুলো মাথার উপরিভাগে অবস্থিত এবং প্রতিটি চক্ষু দুটি ভিন্ন অংশে বিভক্ত।
এই প্রজাতির মাছ খুব বেশি বড় হয় না। এদের দৈর্ঘ্য ৩২ সেন্টিমিন্টার পর্যন্ত হতে পারে। চার চক্ষুবিশিষ্ট মাছ সত্যিই বিস্ময়কর প্রাণী। উভয় চোখের মনি আনুভূমিকভাবে দুই অংশে বিভক্ত। যাতে করে তারা একই সময়ে পানির নিচে এবং পানির উপরের বস্তু যথাযথভাবে দেখতে পারে। চোখের উপরের অর্ধাংশের সাহায্যে জলরেখার উপরে দেখতে পায়। সাথে সাথে নিম্নাংশের সাহায্যে পানির নিচের জিনিস দেখতে সক্ষম হয়। যদিও এ প্রজাতির মাছের চোখের উভয় অংশ একই ল্যান্স ব্যবহার করে এরপরও উভয় অংশের ল্যান্সের পুরুত্ব এবং বক্ররেখার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
এইভাবে তারা পানির উপরের এবং নিচের বস্তু দেখার জন্য ভিন্ন ভিন্ন আলোর ব্যবহার করে থাকে। এর মানে এই যে, যখন এ মাছ সম্পূর্ণভাবে পানিতে নিমজ্জিত থাকে, তখন উপরের অর্ধাংশ ফোকাসের বাইরে থাকে। এরূপ অভিযোজনের ফলে এই ধরণের মাছগুলো খাদ্য অন্বেষণ ছাড়াও শিকারীদের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে এই চক্ষুগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এদের খাদ্যতালিকায় প্রায়ই স্থলজ কীটপতঙ্গ থাকে যা সাধারণত পানির উপরিভাগে থাকে। তথাপি তারা অন্যান্য খাদ্যও গ্রহণ করে।
যেহেতু এই প্রজাতির মাছগুলো বস্তুতপক্ষে জীবনের বেশির ভাগ সময় পানির উপরেই সাঁতরিয়ে বেড়ায়, সেই কারণে অতিরিক্ত নিরাপত্তার প্রয়োজন হয়। তাই এই প্রজাতির মাছগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে চলতে ভালোবাসে।
এ প্রজাতির মাছগুলোকে আবার ঈষৎ লোনা পানিতেও দেখা যায়। তাদের এরূপ নামের সত্ত্বেও চার চক্ষুবিশিষ্ট মাছের শুধুমাত্র দুটি চক্ষু রয়েছে। তবে এদের দুই চোখ সাধারণ মাছের চোখের তুলনায় একটু ভিন্নতর। এদের চক্ষুগুলো টিস্যুও ব্যান্ড দ্বারা বিভক্ত এবং প্রত্যেক অংশের আলাদা চোখের মনি রয়েছে।