শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কিংবদন্তি সনাথ জয়াসুরিয়ার রেকর্ড ভেঙে দিলেন তামিম ইকবাল। ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ভেন্যুতে বাংলাদেশের তারকা ওপেনারের এখন সবচেয়ে বেশি রান।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম নিঃসন্দেহে তামিমের ‘লাকি গ্রাউন্ড’। ‘হোম অব ক্রিকেটে’ তার রান এখন ২ হাজার ৫৪৯। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৬ হাজার রানও পূর্ণ করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার ২ হাজার ৪৭৩ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন তামিম। জিম্বাবুয়ের অফস্পিনার ম্যালকম ওয়ালারের একটি বল লংঅনে পাঠিয়ে সিঙ্গেল নিয়ে এক ভেন্যুতে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড ভেঙে দেন তিনি। রেকর্ডটা গড়তে তাকে খেলতে হয়েছে ৭৩ ইনিংস।
২০০৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের। তবে মিরপুরের ২২ গজে খেলতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৩টি ম্যাচ। সেই বছরের মে মাসে ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে প্রথমবারের মতো ব্যাট হাতে নামেন তিনি। মিরপুরে প্রথম ম্যাচে তার অবদান ছিল ৪৫ রান।
সেই থেকে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়াম তার রান উৎসব দেখেছে। তামিম প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিও পেয়েছেন মিরপুরের ২২ গজে, ২০০৮ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৯ রানের ইনিংস খেলে।
তামিম ৯টি সেঞ্চুরির পাঁচটি পেয়েছেন শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। মিরপুরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ছাড়াও ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে চারটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ১২৫ রানের ইনিংস। এরপর ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে পর পর দু্টি সেঞ্চুরি এই মাঠেই পেয়েছেন। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৩২ রান করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেন অপরাজিত ১১৬ রানের ইনিংস। সর্বশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে ১২৮ রান করেন তামিম।
সাফল্যের পাশাপাশি তিক্ত অভিজ্ঞতাও আছে অবশ্য। ক্যারিয়ারে ১৬বার রানের খাতা না খুলেই আউট হয়েছেন তিনি, যার মধ্যে আট বার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ২ হাজার ৫১৪ রান নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন জয়াসুরিয়া। ৭১ ম্যাচে ৩৮.৬৭ গড়ে ৪ সেঞ্চুরি ও ১৯ হাফসেঞ্চুরি সহ প্রেমাদাসায় এই রান করেছেন তিনি। এই মাঠে তার সর্বোচ্চ রান ১৩০, ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে।
ওয়ানডেতে এক ভেন্যুতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন ইনজামাম-উল-হক। শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ব্যাটিং কিংবদন্তির রান ২ হাজার ৪৬৪। শারজায় ৫৯ ম্যাচে ইনজামাম ১৭টি হাফসেঞ্চুরির পাশাপাশি চারটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন। এই ভেন্যুতে তার সেরা ইনিংস ১৩৭, ১৯৯৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।
মঙ্গলবার আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তামিম। ৬ হাজার ক্লাবে প্রবেশ করতে তার প্রয়োজন ছিল ৬৬ রান। ৩৫তম ওভারে ক্রেমারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এই ক্লাবের সদস্য হয়েছেন তিনি। ১৭৭তম ওয়ানডে খেলতে নামা তামিমের সংগ্রহে এখন ৬ হাজার ১০ রান, সেঞ্চুরি ৯টি, হাফসেঞ্চুরি ৪১টি। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সাকিব আল হাসানের। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ১৮৩ ম্যাচে করেছেন ৫ হাজার ২৩৫ রান। ১৮২ ম্যাচে ৪ হাজার ৬৭০ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে মুশফিকুর রহিম।