কেন সরে দাঁড়াব ? খারাপ করলে দায় অধিনায়কের !!

গত তিন বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বেশ কয়েকবার এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যখন টেস্টে মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বগুণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মতো আর কোনো সময়েই দলের নেতৃত্ব নিয়ে এত প্রশ্নের সম্মুখীন হননি মুশফিক।

পচেফস্ট্রুম টেস্টের মতো ব্লুমফন্টেইনেও টস জিতে তাঁর ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, অধিনায়ক হয়েও তাঁর সীমানায় ফিল্ডিং নিয়ে কিংবা সংবাদ সম্মেলনে বোলারদের তুলোধুনো করার জন্য। এসব কিছুর পাশাপাশি দুটি টেস্টেই দল নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করায় মুশফিকের নেতৃত্ব এখন কাঠগড়ায়। গুঞ্জন উঠেছে, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে নেতৃত্ব থেকে।
ব্লুমফন্টেইন টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে নেতৃত্ব ছাড়া না ছাড়ার সিদ্ধান্তটা বোর্ডের ওপর ছেড়ে দিলেন মুশফিক, ‘হতে পারে। এ সিদ্ধান্তের ভার বোর্ডের ওপর। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্মানটা তাঁরাই আমাকে দিয়েছেন। তাঁরা যদি সন্তুষ্ট না হন, তাহলে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে সততার সঙ্গে বলছি, যা ঘটেছে প্রথম দিনের খেলা শেষে সেটাই বলার চেষ্টা করেছি। নিজের সঙ্গে সৎ থেকেছি। কেউ যদি আমার কথা কিংবা কোনো কিছুতে অসন্তুষ্ট হয়, তাহলে আমার কিংবা দলের ব্যাপারে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে তাঁদের।’
দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই টেস্টে দল মোটেও ভালো খেলেনি। এমনকি খেলোয়াড়দের সামর্থ্যের ছিটেফোঁটাও মাঠের খেলায় ফুটে ওঠেনি। ফিল্ডিংয়ের সময় বাংলাদেশ দলকে দেখে মনে হয়েছে, মানসিকভাবে চাঙা রাখার মতোও কেউ নেই! ব্যাটিংয়ে যেন দিগ্ভ্রান্ত পথিক, পথ দেখানোর কেউ নেই! সংবাদ সম্মেলনে তাই প্রশ্ন করা হয়েছিল, নেতৃত্ব থেকে মুশফিকের সরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে কি না।
কিন্তু মুশফিক বল ঠেলে দিলেন বিসিবির কোর্টে। তাঁর ভাষ্য, ‘কেন সরে দাঁড়াব? এটা তো ব্যক্তিগত কোনো খেলা নয়, দলীয় খেলা। অবশ্যই অধিনায়ক হিসেবে সব দায়ভার আমার ওপর বর্তায়। আমি সেটা মেনেও নিচ্ছি। কিন্তু একই সঙ্গে, দেশের নেতৃত্ব দেওয়া আমার জন্য দারুণ সম্মানের। আমি সত্যিই গর্বিত। তাই এটা হবে বোর্ডের সিদ্ধান্ত, কারণ সুযোগটা তাঁরা করে দিয়েছেন। পরবর্তী সিরিজের আগে হাতে বেশ সময় আছে, তাঁরা বললে ছেড়ে দেব।’
সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে বেশ অভিমানী কণ্ঠে মুশফিক বলেন, ‘আমি সব সময় নিজের সর্বোচ্চটুকু করার চেষ্টা করেছি। টিম ম্যানেজমেন্টও সেই চেষ্টা করেছে। দল ভালো করলে সব প্রশংসা পায় টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু আমরা খারাপ করলে সব দায় চাপে অধিনায়কের ওপর।’
দলের বাজে হার নিয়ে মুশফিকের ব্যাখ্যা, ‘উপমহাদেশের অনেক দল এখানে এসে কিন্তু খারাপ খেলে। নয় বছর আগে আমরা যে দলটা এখানে এসেছিলাম, তার মধ্যে এ ম্যাচে শুধু দুজন খেলেছি—আমি ও ইমরুল কায়েস। তাই আমাদের নতুন দলের জন্য এটা কঠিন ছিল। তবে সুযোগ ছিল ভালো খেলার। বিশ্বাস ছিল, সবাই আরও ভালো করবে। কিন্তু আমাদের যে সামর্থ্য ছিল, সেটা বিশ্বকে দেখাতে পারিনি। এ জন্য একটু খারাপ লাগছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, দল হিসেবে আমরা এত খারাপ খেলেছি, এটা আসলে আমরা কখনোই আশা করিনি। অন্তত বাংলাদেশ দল থেকে আমরা কখনোই এটা আশা করিনি।’

carticy –  Daly Prothom Alo

আরো কিছু পোস্টঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *