সাগরপাড়ের শিশুদের জীবনসংগ্রাম

( মীম নোশিন নাওয়াল খান )

images cox

———পর্যটন নগরী কক্সবাজার। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দেখতে এখানে সারা বছর দেশিবিদেশি পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। ছবির মত সুন্দর শহর কক্সবাজার। এই শহরের অন্যতম হৃদয়স্পর্শী দৃশ্য সাগরপাড়ের শিশুদের জীবনসংগ্রাম। এদের কেউ শামুকঝিনুক বিক্রি করে, কেউবা পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়িয়ে আনন্দ দেয়।

children
জীবন সংগ্রামী দুই শিশু

এরকমই একজন মুন্নি। সে শুকনো তারা মাছের শোপিস বিক্রি করে। কোন নিষ্ঠুর মানুষ তার বাবাকে কৌশলে বিষপান করিয়ে মৃত্যুর দুয়ারে ঠেলে দিয়েছে। মা অসুস্থ। তিন ভাইতিন বোনের মধ্যে মুন্নি চতুর্থ।অন্য ভাইবোনেরা কেউ কিছুই করে না।বলা জায় তার রোজগারেই কোনমতে চলে সংসার। স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে কী না জানতে চাইলে মুন্নি বলে – আপু, আমি ইশকুলে গেলে তো ভাত জুটব না।সবাইরে না খায়ে থাকা লাগব। তাই যাই না।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিকেল বেলায় ঘোড়া নিয়ে বের হয় আবু হাসান। ঘুরতে আসা পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়ার সুযোগ করে দেয় সে। তার বাবা ছোটখাট ব্যবসা করে। আবু হাসান পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। স্কুল শেষে ঘোড়া নিয়ে সৈকতে আসে। বড় হয়ে একজন ভাল মানুষ হতে চায় সে ।

লাবণী বিচ মার্কেটের ছোট্ট একটি দোকানের কর্মচারী হেলা। অভাবের সংসারে দু পয়সা যোগাতে অধ্যয়নরত অবস্থায় স্কুল ছেড়েছে হেলা ।এইত গত বছর পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ত সে ।ছাত্র হিসাবেও ছিল মেধাবী ।কিন্তু বাবা মারা জাওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা আর দেয়া হয়নি তার। হেলা জানায়, সুযোগ পেলে সে আবার পড়াশুনা করবে।

আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে মুন্নি, আবু হাসান হেলার মত অসংখ্য শিশু। অভাবঅনটনের কারণে শৈশবের আনন্দ বিসর্জন দিয়ে জীবন সংগ্রাম করছে তারা। সঠিক পথ নির্দেশনা পেলে তারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বেড়ে উঠতে পারে আদর্শ মানুষ হিসেবে। সমাজের হৃদয়বান মানুষদের উচিত এদের সাহায্যে এগিয়ে আসা। কারণ, ওরাও দেশের সন্তান, বাংলাদেশের ভবিষ্যত।

 

( মীম নোশিন নাওয়াল খান )

ভিকারুননিসা নুন স্কুল এ্যান্ড কলেজ

 

আরো কিছু পোস্টঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *